বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা বেড়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে। এশিয়া থেকে ইউরোপ, সর্বত্র শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস নেমেছে। প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

শেয়ারবাজারে পতনের ধাক্কা
সোমবার (১০ মার্চ) নিউইয়র্কের শেয়ারবাজারে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ২.৭% হ্রাস পায়, ডাও জোন্স সূচক কমে ২% এবং প্রযুক্তি খাতনির্ভর নাসডাক সূচক পড়ে যায় ৪%। বিশেষ করে টেসলার শেয়ারের দাম ১৫.৪% কমে যায়, এনভিডিয়া ৫% এবং মেটা, অ্যামাজন ও অ্যালফাবেটের শেয়ারও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এশিয়ার বাজারেও এই প্রভাব স্পষ্টভাবে দেখা যায়। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিনের শুরুতেই জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ২.৫% কমে যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচক পড়ে ২.৩% এবং অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক হ্রাস পায় ১.৮%।

শুল্ক নীতির প্রভাব ও বিশ্লেষকদের উদ্বেগ
বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্লেষকরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিনিয়োগ ব্যবস্থাপক র‍্যাচেল উইন্টার মন্তব্য করেন, “ট্রাম্পের শুল্ক নীতির বর্তমান গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে, এটি ভবিষ্যতে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির দিকে নিয়ে যাবে।”

অন্যদিকে, হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টারা দাবি করছেন, শুল্ক নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বাড়ছে এবং উৎপাদন খাত শক্তিশালী হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা আমেরিকায় সম্পদ ফিরিয়ে আনছি, যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক দিক।”

তবে অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ এল-এরিয়ান সতর্ক করেছেন, “প্রথম দিকে বিনিয়োগকারীরা কর ছাড় ও নিয়ন্ত্রণ শিথিলের ফলে আশাবাদী ছিলেন, কিন্তু এখন তারা বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি উপলব্ধি করতে শুরু করেছেন।”

বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসা ও ভোক্তাদের ব্যয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য গুরুতর সংকট তৈরি করতে পারে।